প্রোগ্রামিং বা ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য একটি ল্যাপটপ কিভাবে চুজ করবেন?



প্রোগ্রামিং শেখা বা ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য হাই কনফিগারের ল্যাপটপের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু প্রোগ্রামিং বা কোডিং করার পাশাপাশি ওয়ার্ড প্রসেসিং, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, এক্সেল স্প্রেডশিট, ইন্টার্নেট ব্রাউজিং এবং ইউটিউব ব্রাউজিং ইত্যাদি ধরনের কাজ করার প্রয়োজন হয়। এই পর্বে বাজেট ভিত্তিক সংক্ষেপে একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

আপনার বাজেট যদি ২৫ হাজারের নিচে হয়: 

এই বাজেটে একটি লো কনফিগারের ডেস্কটপ পিসি বিল্ড করে নিতে পারেন। প্রোগ্রামিং শেখার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। তবে যদি ল্যাপটপ ই কিনতে চান তাহলে

এই বাজেটে বর্তমানে নতুন ল্যাপটপ কেনা সম্ভব নয়। তবে প্রজেক্ট এর কিছু ল্যাপটপ পাওয়া যায়। নতুন ল্যাপটপ দিয়ে প্রজেক্ট শুরু হয়, প্রজেক্ট শেষ হয়ে গেলে ল্যাপটপটি তারা বিক্রি করে দেয়। তবে পুরাতন ল্যাপটপ না কেনার পরামর্শ রইলো। 

আপনার বাজেট যদি ২৫ হাজার থেকে ৩৮ হাজার হয়: 

এই বাজেটেও নতুন ভালো ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কেনা কঠিন। ল্যাপটপ সম্পর্কে ভালো জানে এমন কারো মাধ্যমে বিদেশ থেকে আসা সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ অথবা প্রজেক্ট এর হাই কনফিগারেশন এর একটি ল্যাপটপ নিতে পারেন। তবে সতর্ক থাকতে হবে যেহেতু সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কিনছেন।

বি: দ্র: তবে এই বাজেটে আপনি খুব ভালো মানের ডেস্কটপ পিসি তৈরি করে নিতে পারবেন। প্রোগ্রামিং সহ ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর দিয়ে টুকিটাকি এডিটিং করতে পারবেন। ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে PSD টু HTML, FIGMA টু HTML, XD টু HTML এর কাজগুলো সুন্দরভাবে করতে পারবেন।

আপনার বাজেট যদি ৩৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার হয়: 

এই বাজেটেই আপনি নতুন ল্যাপটপ কিনতে পারবেন। Intel core i3 এর ৮ জেনারেশন এর কাছাকাছি একটি প্রসেসর, ৪ জিবি ram  এর একটি ল্যাপটপ কিনতে পারবেন। ল্যাপটপ কেনার সময় এক্সট্রা M.2 পোর্ট দেখে কিনবেন যেন একটি SSD অথবা একটি ram লাগানো যায়। এই প্রাইস রেঞ্জ এ Lenovo  ব্রান্ডের কিছু ল্যাপটপ দেখতে পারেন। বর্তমানে নামকরা ব্রান্ডের ল্যাপটপগুলোর প্রাইস অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রান্ড নিয়ে যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে শাওমি ব্রান্ডের ৫০ হাজার প্রাইসের একটি ল্যাপটপ Mi Redmibook 15 রয়েছে। এটিকে আপনার পছন্দের লিস্টে রাখতে পারেন। এই প্রাইজ রেঞ্জে আপনার কাজের উপযোগী একটি ল্যাপটপ খুঁজে বের করতে হলে আপনাকে সময় দিতে হবে।

আপনার বাজেট যদি ৫০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার হয়:

এই প্রাইস রেঞ্জের ল্যাপটপগুলো সব থেকে বেশি বিক্রি হয়। ইন্টেল core i3 এর ১১ জেনারেশন, ৮ জিবি ram, 256 GB SSD, LED ডিসপ্লে সহ ভালো ভালো ব্রান্ডের ল্যাপটপ পাবেন। ইনটেল core i5 এর কিছু কিছু জেনারেশন এই প্রাইস এ পেতে পারেন। তবে এই প্রাইস রেঞ্জে ল্যাপটপ চুজ করা অনেক কঠিন। এই প্রাইস রেঞ্জে ৫৪ হাজারের কাছাকাছি রিয়েলমি ব্র্যান্ডের Realme slim book মডেলের ল্যাপটপটি চেক করতে পারেন। এই ল্যাপটপটির একটি দুর্দান্ত 2k রেজুলেশনের ডিসপ্লে রয়েছে। তবে একটি সমস্যাও রয়েছে। ৮ জিবি ram এর পরে যদি আপনি আরো ram বৃদ্ধি করতে চান তার জন্য এক্সট্রা কোন পোর্ট নাই। আপনার যদি ৮ জিবি ram এর বেশি প্রয়োজন না হয় তাহলে আপনার পছন্দের লিস্টে এই ল্যাপটপটি রাখতে পারেন। এছাড়া শাওমি ব্র্যান্ডের ৬০ হাজার টাকার স্লিম ও প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটির একটি ল্যাপটপ রয়েছে। Mi Redmibook 15 Pro। এটিকেও আপনার পছন্দের লিস্টে রাখতে পারেন।

আপনার বাজেট যদি ৬৬ হাজার থেকে ৭৮ হাজার হয়:

এই প্রাইস রেঞ্জে সকল ব্রান্ডের ল্যাপটপ রয়েছে। ইনটেল core i5 এর লেটেস্ট জেনারেশন, ৮ জিবি ram, গ্রাফিক্স কার্ড, ৫১২ SSD, OLED ডিসপ্লে সহ অনেক কিছুই পাবেন। এই রেঞ্জে Asus, Lenovo, HP, Dell সহ সকল ব্রান্ডের ভালো ভালো ল্যাপটপ রয়েছে। Asus vivobook সিরিজের ল্যাপটপ এই প্রাইস রেঞ্জে পাবেন। যেহেতু এই প্রাইস রেঞ্জ এ মোটামুটি ভাল কনফিগারেশন এর ল্যাপটপ পাওয়া যায় তাই একটি স্লিম ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ল্যাপটপ সবাই ডিজার্ভ করে। পোস্টটি লেখার সময় পর্যন্ত আমার কাছে এই প্রাইস রেঞ্জের সবথেকে বেস্ট ল্যাপটপ মনে হয়েছে শাওমি ব্র্যান্ডের একটি ল্যাপটপ। স্লিম ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ল্যাপটপটি আমার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। আপনার পছন্দের তালিকায় Mi Notebook Pro ল্যাপটপটি রাখতে পারেন।ল্যাপটপটির কনফিগারেশন সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

Processor : Intel core i5 -11300H 

Ram : 16 GB RAM 3200MHz DDR4 

Storage: 512  NVMe SSD

Graphics: Intel Iris Graphics

Keyboard: 3 level backlit keyboard 

Display: 2.5K (2560x1600) Display 14"

cache: 8MP

এই ল্যাপটপ টিকে অন্যান্য ল্যাপটপ থেকে এগিয়ে রাখার কারণ হচ্ছে এটিতে ১৬ জিবি ram রয়েছে। এই প্রাইস রেঞ্জে অন্যান্য ব্রান্ডগুলোতে ৮ জিবি ram প্রোভাইড করছে। এছাড়া এই ল্যাপটপটিতে 2.5K রেজুলেশনের একটি ডিসপ্লে রয়েছে। এটি একটি স্লিম ল্যাপটপ হওয়া সত্ত্বেও যাবতীয় সকল পোর্ট সহ থান্ডারবোলট পোর্ট রয়েছে। 


এই প্রাইস রেঞ্জে ওয়ালটনের একটি ল্যাপটপ রয়েছে। যেটিতে কোর i7 এর প্রসেসর রয়েছে। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে কনফিগারেশন সন্তোষজনক মনে হয়নি অর্থাৎ ব্যালেন্স মনে হয়নি আমার কাছে। ল্যাপটপটির মডেল হচ্ছে Walton Passion BX 710U core i7 । এটির বিস্তারিত দেখার পরামর্শ রইলো। 

রিয়েলমি ব্রান্ডের একটি ল্যাপটপ শুধু ২k ডিসপ্লে নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। অন্যান্য স্পেসিফিকেশন একই। Realme book core i5 2k Display 11 Gen.

যদি এই প্রাইস রেঞ্জে নামকরা ব্রান্ড এর ল্যাপটপ নিতে চান তাহলে intel core i5 11 Gen, 8GB Ram, 1080 রেজুলেশনের ডিসপ্লে নিয়ে বাজার দখল করে আছে কিছু ল্যাপটপ।যেগুলোর বিস্তারিত দেখে বুঝে শুনে কেনার চেষ্টা করবেন। কিছু মডেল নিম্নে দেয়া হলো -

Asus Vivobook 15X515EA ইত্যাদি

Lenovo ideaPad slim 3i 15ILT ইত্যাদি

HP Pavilion 14-dv1234TU ইত্যাদি


আফটার অল টাকা আপনার ল্যাপটপ নিবেনও আপনি তাই অবশ্যই দেখেশুনে বুঝে নিবেন। এটা শুধু আমার মতামত শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। আপনারা আপনাদের নির্ধারিত কাজের জন্য উপযুক্ত একটি ল্যাপটপ চুজ করতে পারবেন এই আশা রেখে আজকের পর্ব শেষ করছি। ধন্যবাদ! সবাই ভালো থাকবেন!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url