ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করবেন যেভাবে। How to Apply for Driving License at Home



এখন থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে আপনাকে আর BRTA অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। দালালের পেছনে পেছনে দৌড়াতে হবে না। আপনি খুব সহজে আপনার স্মার্টফোন দিয়ে ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলটি বড় হয়ে যেতে পারে। তাই আপনারা যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে চান তারা একটু ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি দেখতে পারেন। ফলে আপনাদের জন্য এই ঝামেলাযুক্ত  বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।


শুরুতেই আপনাকে আপনার স্মার্টফোন থেকে যে কোন একটি ব্রাউজার যেমনঃ গুগল ক্রোম, ফায়ারফক্স, অপেরা মিনি ইত্যাদি এর ভেতর থেকে যে কোন একটি ওপেন করতে হবে। আমি আমার স্মার্ট ফোন থেকে গুগল ক্রোম ব্রাউজার টি ওপেন করছি। এরপর অ্যাড্রেসবারে গিয়ে টাইপ করতে হবে bsp.brta.gov.bd। টাইপ করার পর এন্টার প্রেস করলে brta এর ওয়েবসাইট চলে আসবে। ওয়েব সাইটটি দেখতে নিচের মত হবে।

এইখান থেকে নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করলে আপনার সামনে একটি ফরম ওপেন হবে।



আপনার যদি আগে থেকে নিবন্ধন করা থাকে তাহলে "এখানে ক্লিক করুন" বাটনে ক্লিক করতে হবে। আর যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে নতুন করে একটি একাউন্ট এর জন্য নিবন্ধন করতে হবে। জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দেয়া হয়ে গেলে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করলে সম্পূর্ণ ডিটেইলস দেখতে পাবেন। এটি জাতীয় পরিচয় পত্রের আন্ডারে যে সকল ইনফরমেশন রয়েছে, সেই ইনফরমেশন গুলো আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে। অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড যে ব্যক্তির, সেই ব্যক্তির যাবতীয় ইনফর্মেশন প্রদর্শিত হবে ওয়েবসাইট এ।


তারপর আপনাকে তিনটি ইনফর্মেশন প্রদান করতে হবে।

  1. প্রথমত একটি মোবাইল নাম্বার,
  2. দ্বিতীয়ত একটি ইমেই্‌ল
  3. তৃতীয়ত যেকোনো একটি পাসওয়ার্ড


পাসওয়ার্ডটি সঠিক কিনা সেটি কনফার্মেশন করার জন্য আরো একবার পাসওয়ার্ডটি লিখতে হবে। তারপর নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করলে আপনার একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। 


অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন ইমেইল আসবে। এরপর আপনি যে ইমেইল দিয়ে একাউন্টটি করেছিলেন সেই ইমেইলে গিয়ে bsp থেকে আসা ইমেইলটি ওপেন করবেন। ওপেন করার পর click

লেখাটির উপর ক্লিক করলে আপনার একাউন্টটির ইমেইল ভেরিফিকেশন  হয়ে যাবে।


এখন আপনার একাউন্টে লগইন করতে হবে লগইন করার জন্য ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দুটি প্রদান করতে হবে। যে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড অ্যাকাউন্ট করার সময় দেওয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে যতবার এই একাউন্টের ভেতরে প্রবেশ করার প্রয়োজন হবে ততবার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিলে লগিন করতে হবে। যাদের আগে থেকে একাউন্ত করা তারা এখান থেকে শুরু করবে অর্থাৎ লগিন করবে।




পুরাতন একাউন্টের জন্য Login করতে হয় এবং নতুন একাউন্ট এর জন্য প্রথমবার Sign in করে তার পরে সর্বদা লগিন করতে হয়।

Login বাটনে ক্লিক করার পর আপনার মোবাইল নাম্বারে ওটিপি নাম্বার যাবে।




এখানে ওটিপি নাম্বার প্রদান করে তারপর একাউন্টের ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করতে হবে। অথবা মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করতে হবে।


অনলাইনে পেমেন্ট করতে হলে সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটার মধ্যে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে। 


এত সময় ধরে আমরা ওয়েবসাইট একটি অ্যাকাউন্ট সম্পন্ন করলাম। এখন আমরা এই একাউন্টের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করব। তার জন্য মোবাইলে বামদিকে উপরের কর্নারে থ্রি ড্যাস বাটনে ক্লিক  করতে হবে।


ক্লিক করলে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আবেদন অপশনটি পাবেন


এই অপশনে ক্লিক করলে "শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের" জন্য আবেদন অপশন চলে আসবে। সেই অপশনে ক্লিক করলে কি কি ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে সে ইনফরমেশন গুলো চলে আসবে।

  1. আবেদনকারীর একটি ছবি 150 কিলোবাইটের ভিতর হতে হবে।
  2. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট সর্বোচ্চ 600 কিলোমিটার ভেতরে  হতে হবে। এই সার্টিফিকেটের জন্য একটি লিঙ্ক পাবেন। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলে একটি ফরম পাবেন ফর্ম টি ডাউনলোড করে পূরণ করবেন তারপর যেকোন একটি ডাক্তারের কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিবেন। 
  3. জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যান করা কপি জমা দিতে হবে। 600 কিলোমিটার ভেতরে হতে হবে। 600 কিলোবাইট এর বেশি হলে ছবিটি আপলোড করা সম্ভব হবে না।  
  4. ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে। এখানেও সর্বোচ্চ 600 কিলোমিটার ভেতরে হতে হবে। বেশি হলে আপলোড করা যাবে। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যদি ভিন্ন হয় তাহলে বর্তমান ঠিকানার মাধ্যমে ইউটিলিটি বিল সংযুক্ত করতে হবে। ইউটিলিটি বিল বলতে অনেক কিছুই রয়েছে যার মধ্যে বিদ্যুত বিল পানির বিল আমাদের অতি পরিচিত। এরপর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র স্ক্যান করে জমা দিতে হবে।



সব রিকোয়ারমেন্ট গুলো দেখার পর আপনার সামনে একটি বাটন আসবে “আমি সম্মত”। সকল রিকোয়ারমেন্ট ঠিক থাকলে “আমি সম্মত” বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী স্টেপে যেতে পারবেন । ক্লিক করার পর আপনার সামনে একটি ইন্টারফেস আসবে এখান থেকে পেশাদার অথবা অপেশাদার দুইটার যেকোনো একটি অপশন সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যদি নিজের মোটরসাইকেল চালাতে চান তাহলে আপনি অপেশাদার অপশন সিলেক্ট করবেন। আর যদি ট্রাক বা বাস এই টাইপের কোন যানবাহনের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে চান, তাহলে পেশাদার অপশনে ক্লিক করবেন।




তারপর আপনাকে একটি ছবি দিতে হবে। ছবি আপলোড করার জন্য ছবির আইকনে ক্লিক করতে হবে।


ক্লিক করলে ফাইল ম্যানেজার থেকে ছবি সিলেক্ট করার জন্য অপশন চলে আসবে। আপনার প্রোফাইল পিকচারটি ৩০০x৩০০ ডাইমেনশনে সেইভ করে তারপরে সিলেক্ট করতে হবে।


তারপর একটু নিচের দিকে স্ক্রল করলে দেখতে পারবেন, অটোমেটিক্যালি কিছু ইনফরমেশন আগে থেকে পূর্ণ করা আছে। এখন আর কিছু ইনফরমেশন ফিলাপ করতে হবর যেমনঃ ইংরেজিতে বাবা ও মায়ের নাম, জেন্ডার( পুরুষ হলে পুরুষ এবং মহিলা হলে মহিলা সিলেক্ট করতে হবে) তারপর পেশা অবশ্যই দিতে হবে। কারণ এটি অপশনাল। এছাড়া বৈবাহিক অবস্থা সহ বিভিন্ন জিনিস রয়েছে সেগুলো আপনি ইনপুট না করলে সমস্যা হবে না।



তারপর স্ক্রল করে একটু নিচের দিকে গেলে সার্টিফিকেট সাবমিট করার অপশন চলে আসবে।



আপনি আপনার একাডেমিক সার্টিফিকেট গুলা স্ক্যান করে ইমেজ আকারে সাবমিট করতে পারবেন। তারপর বর্তমান ঠিকানা ইনপুট করতে হবে। তারপর স্থায়ী ঠিকানা ইনপুট করতে হবে। A সেকশন এর কাজ প্রায় শেষ। এবার আমরা সেকশন B এর কাজ শুরু করব। 


এই পর্যায়ে আপনি যে শিক্ষকের কাছ থেকে ড্রাইভিং শিখছেন, তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার প্রদান করার জন্য অপশন পাবেন। কিন্তু এটি অপশনাল। তাই না দিলে সমস্যা নাই। তারপর পরীক্ষার স্থান সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যে স্থানে থেকে পরীক্ষা দিতে চান সেটি সিলেক্ট করতে হবে। তারপর মোটরসাইকেলের শ্রেণী সিলেক্ট করার অপশন আসবে। আপনি যদি মোটরসাইকেল এবং প্রাইভেটকার একসাথে করতে চান তাহলে আপনাকে মোটরসাইকেল এবং লাইট দুটি অপশনই চেক করে রাখতে হবে।

পরবর্তী অপশনে আপনাকে কিছু সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হবে যেমন মেডিকেল সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও ইউটিলিটি বিল সংযুক্ত করতে হবে।



এই সার্টিফিকেটগুলো সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে নিচে কিছু ইন্সট্রাকশন রয়েছে ইন্সট্রাকশন গুলো অবশ্যই ফলো করতে হবে। তাছাড়া ফাইলগুলোকে আপলোড করতে কঠিন হয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আপলোড করা সম্ভব হবে না। সবগুলো ফাইল আপলোড করা হয়ে গেলে “সংরক্ষন করুন” বাটনে ক্লিক করতে হবে। 


এই পর্যায়ে কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়া যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করব অনলাইনে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটার হলে সমস্যা নাই কিন্তু মোবাইল এন্ড্রয়েড ফোন হলে ব্রাউজার এর উপরে ডান পাশে ক্লিক করে ডেক্সটপ মোড ওপেন করে নিতে হবে আদারোয়াইজ অপশনগুলো পরিপূর্ণভাবে দেখা যাবে না। 


এরপর একটি নতুন ইন্টারফেস দেখতে পাবেন সেখান থেকে শিক্ষানবীশ লাইসেন্স সংক্রান্ত তথ্য এই অপশনে ক্লিক করবেন। ক্লিক করার পর আপনি যে ড্রাফটে একটু আগে রেডি করেছেন সে ট্রাপটি দেখতে পাবেন সেখান থেকে ডানদিকে স্ক্রল করে একটা আনতে গেলে দেখতে পাবেন “পুনঃসংযোজন” বাটনটি। সেই বাটনে ক্লিক করবেন।তারপর একটু নিচের দিকে স্ক্রল করে আসলে একটি টেবিল দেখতে পাবেন যে টেবিলে চার্ট করে দেওয়া রয়েছে। 


        ইস্যু অফ লার্নার লাইসেন্স লাইট এর জন্য 300 টাকা এবং 

        ইস্যু অফ লার্নার লাইসেন্স মোটরসাইকেল এর জন্য ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।


একটি ডানদিকে স্ক্রল করলে ভ্যাট সহ মোট টাকার পরিমান দেখতে পাবেন। 500 থেকে 600 টাকার ভিতরে একটি অ্যামাউন্ট নির্ধারণ করা হবে। যদি অনলাইনে ফি জমা দিতে চান তাহলে “ফি জমা দিন” অপশনে ক্লিক করলে পেমেন্ট ইনফরমেশন ইন্টারফেস ওপেন হবে। তারপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি অটোমেটিক্যালি সিলেক্ট হয়ে থাকবে। আপনি যে থেকে ফি প্রদান করতে চাচ্ছেন সেই নাম্বারটি যদি ঠিক থাকে তাহলে সেই নাম্বারের পাশে একটি টিক চিহ্ন দিয়ে দিতে হবে।


তারপর স্ক্রল করে একেবারে নিচের দিকে দেখতে পাবেন DBBL অপশন রয়েছে, বিকাশের অপশন রয়েছে। বিভিন্ন প্রকার পেমেন্ট মাধ্যম পেয়ে যাবেন। আপনি যে মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান সেই মাধ্যম সিলেট করে এগ্রি করতে হবে টার্মস এন্ড কন্ডিশনের সাথে। তারপর "নিশ্চিত" বাটনে ক্লিক করলে ssl কমার্স এর পেমেন্ট গেটওয় ওপেন হবে। 


এই স্টেপে আপনাকে আপনার বিকাশ নাম্বারটি দিতে হবে। তারপর একটি কনফার্মেশন কোড আসবে। সেই কোডটি দিতে হবে। তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের পাসওয়ার্ড টি প্রদান করতে বলবে। পাসওয়ার্ডটি প্রদান করার সাথে সাথেই আপনার পেমেন্ট কমপ্লিট হয়ে যাবে। 


আরো কিছু কাজ বাকি রয়েছে যেমন পেমেন্ট কমপ্লিট হয়ে গেলে দুটি রিসিট ডাউনলোড করে রাখতে হবে। একটি হচ্ছে পেমেন্ট রিসিট আরেকটি হচ্ছে আপনার পরীক্ষার তারিখ কবে? কি কি ডকুমেন্ট নিয়ে যেতে হবে? এই ধরনের ইন্সট্রাকশন থাকবে। সেই ইনস্ট্রাকশন দেখে সঠিকভাবে ফাইলগুলো নিয়ে পরীক্ষার দিন পরীক্ষা দিতে যেতে হবে। তবে ইনস্ট্রাকশনে মূল সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আপনি মূল এবং সত্যায়িত ফটোকপিন উভয় প্রকার সার্টিফিকেট নিয়ে যাবেন।


এখন প্রশ্ন হচ্ছে এখানে কত নাম্বারের প্রশ্ন হবে?

উত্তর হচ্ছে এখানে ২০ নাম্বারের পরীক্ষা হবে। মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন (MCQ) আকারে প্রশ্ন থাকবে। আপনাকে সঠিক উত্তরটি বাছাই করতে হবে। সময় থাকবে ২০ মিনিট। পাশাপাশি পাশ নাম্বার থাকবে হচ্ছে ১২। এরপর মৌখিক পরীক্ষা হবে সেখানে আপনাকে কিছু ট্রাফিক সিগনাল টাইপের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হতে পারে। এই দুই পরীক্ষায় যদি উত্তীর্ণ হন, তাহলে আপনাকে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা পরীক্ষার জন্য বিবেচনা করা হবে। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা আপনাকে গাড়ি চালিয়ে দেখাতে হবে যে আপনি গাড়ি চালাতে পারেন।


রিটেন, মৌখিক এবং প্রাক্টিক্যাল এই তিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনি নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদনের মাধ্যমে আপনাকে একটি স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। আশা করি কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। কোন সমস্যা হলে কমেন্টে প্রশ্ন করবেন। উত্তর করার চেষ্টা করব ভালো থাকবেন! সুস্থ থাকবেন! ধন্যবাদ!


Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url