আপনার মোবাইল টি আসল নাকি নকল যেভাবে দেখবেন - Your mobile phone is fake or original?


নতুন মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই চেক করে নিবেন মোবাইলটি আসল নাকি নকল। একটি মোবাইল যেহেতু দীর্ঘদিন ব্যবহার করার জন্য কেনা করা হয়। তাই কেনার আগে সবকিছু দেখে শুনে সতর্কতার সহিত দেখে নেয়া ভালো।

বর্তমান সময়ে রিস্ক না নিয়ে একটা অফিসিয়াল ফোন ক্রয় করা ভালো। মার্কেটে ফোন কিনতে গেলে আপনার সামনে দুটি অপশন আসবে। 

অফিসিয়াল ফোন অথবা

আনঅফিসিয়াল ফোন


অফিসিয়াল মোবাইল ফোন যদি নিতে চান:

অফিসিয়াল ফোন এর ক্ষেত্রে প্রাইস টা একটু বেশি থাকে কারণ ফোনগুলি সরকারকে ভ্যাট দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করে। পাশাপাশি আনঅফিসিয়াল ফোনগুলো রেজিস্ট্রেশন না করে অর্থাৎ সরকারকে ভ্যাট না দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে বর্ডার পার হয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করে। যার কারণে আনঅফিসিয়াল ফোন গুলোর প্রাইস একটু কম হয়। আন অফিসিয়াল ফোনগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে নকল হয়ে থাকে। 


ইনটেক মোবাইল ফোন দেখে নিবেন:

মোবাইল ফোনটি শুধু অফিশিয়াল হইলেই চলবে না অবশ্যই ইনটেক হতে হবে। আপনি যদি আপনার পছন্দের ব্রান্ডের শোরুম থেকে একটি অফিসিয়াল ফোন কিনতে চান। তাহলে যে মোবাইল টি ক্রয় করবেন সেই মোবাইলটি ইনটেক কিনা তা চেক করবেন। যদি ইনটেক হয়ে থাকে তাহলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবুও যেহেতু ইলেকট্রনিক ডিভাইস। তাই সবার ক্ষেত্রে ভালো সার্ভিস দিবে এইটা আশা করা ঠিক নয়। 


আনঅফিসিয়াল মোবাইল ফোন যদি কিনতে চান:

আপনি যদি আনঅফিসিয়াল মোবাইল ই কিনতে চান তাহলে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। মনে করেন আপনি শাওমি কোম্পানির একটি মোবাইল ফোন কিনতে চাচ্ছেন। সেজন্য প্রথমে আপনি শাওমি মোবাইল ফোনের শোরুমে চলে যাবেন। যে মডেলটি কিনতে চাচ্ছেন সেই মোবাইলটির একটি মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে নিবেন। মোবাইলটি ডিসপ্লে কেমন, বিল্ড কোয়ালিটি কেমন, পোর্ট গুলো কেমন, সবগুলো মাথার ভিতরে সুন্দর করে সেট করে নিবেন। মোবাইলগুলো যদি শাওমি কোম্পানি না বানিয়ে অন্য কোন থার্ড পার্টি কোম্পানি মোবাইলটি বানিয়ে থাকে। তাহলে বিল্ড কোয়ালিটিতে সমস্যা থাকতে পারে। তবে এখন অবশ্য বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করে নকল মোবাইল আইডেন্টিফাই করা অনেক কঠিন। 

EMEI নাম্বার দিয়ে মোবাইল চেকিং পদ্ধতি:

দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত একটা পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থাৎ EMEI নাম্বারের মাধ্যমে মোবাইল ফোন চেক করা হতো। যেকোনো মোবাইল থেকে *#06# টাইপ করলেই ওই মোবাইলের emei নাম্বার শো করবে।

তারপরে একটি নোটবুকে EMEI নাম্বার লিখে রাখবেন। সাধারণত দুইটি EMEI নাম্বার শো করে। দুটি নাম্বারের যেকোনো একটি নাম্বার নোট করে রাখলেই হবে। এরপর গুগলে গিয়ে সার্চ করবেন emei.info। 


emei.info ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করবেন। সিকিউরিটির জন্য একটি ক্যাপচা আসতে পরে। সেখানে একটি টিক(√) দিয়ে কনফার্ম করে দিবেন। তারপরে সেখানে উক্ত মোবাইলটির emei নাম্বারটি সাবমিট করে চেক করবেন। লক্ষ্য করবেন সেটটির কিছু ইনফরমেশন শো করবে ওয়েবসাইটটি। নিচের ছবির মত দেখতে পারবেন! 

প্রযুক্তি আপডেট হওয়ার সাথে সাথে নকলবাজরাও সতর্ক হয়েছে। নকল মোবাইল ফোনটি তৈরি করার সময় থার্ড পার্টি কোম্পানিগুলো মোবাইলটির ভেতরে একটি আসল ফোনের emei নাম্বার সেট করে দেয়। পরবর্তীতে যখন emei নাম্বারটি দিয়ে চেক করা হয় তখন ফোনটি নকল হওয়া সত্ত্বেও একটি আসল মোবাইল ফোনের emei নাম্বার শো করে। সেই emei নাম্বারটি যখন ওয়েবসাইটে সাবমিট করে পরীক্ষা করা হয় তখন ওয়েবসাইটটি অবশ্যই সেই আসল মোবাইল ফোনের ইনফরমেশন শো করে। তাই আমার মতে এই পদ্ধতি সবসময় কার্যকর হয় না মোবাইল চেক করার জন্য।


নকল মোবাইল এর সম্ভাব্য সমস্যাগুলো:

নকল মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে সমস্যা গুলো দেখা যায় তা হল স্টোরেজ সমস্যা, ram সমস্যা ইত্যাদি। আপনি যখন সেটিং এ যাবেন তখন দেখতে পারবেন ৬ জিবি র‍্যাম কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সেটের ভিতর ২ জিবির বেশি ram ইউজ করতে পারবেন না। আবার স্টোরেজের ক্ষেত্রে ও লেখা থাকবে ১২৮ জিবি কিন্তু ৪০ থেকে ৫০ জিবির বেশি ইউজ করতে পারবেন না। 


চেক করার কার্যকরি পদ্ধতি: 

বেশ কিছু সফটওয়্যার রয়েছে। যেগুলো প্রকৃতপক্ষে মোবাইল এর আসল কনফিগারেশন শো করে। তাই এই সফটওয়্যার গুলো ইনষ্টল করে ওপেন করলে আপনি আপনার মোবাইল ফোনের সকল হার্ডওয়্যার কনফিগারেশন দেখতে পাবেন। এই সফটওয়্যার গুলো About Phone এর টেক্সট গুলো শো করে না। প্রকৃতপক্ষে মোবাইলের ভেতর ঠিক যতটুকু ram আছে তাই শো করে। যতটুকু স্টোরেজ আছে তাই শো করে। এমন সফটওয়্যার অনেক আছে। সেগুলোর মধ্যে দুইটি এখানে উল্লেখ করলাম।

১ hardware info

২ cpu-z

হার্ডওয়ার ইনফো সফটওয়্যার টা যেভাবে ইউজ করবেন:

হার্ডওয়ার ইনফো সফটওয়্যার টা গুগল প্লে স্টোরে পাবেন। প্লে স্টোরে গিয়ে  Droid hardware info লিখে সার্চ করবেন। হার্ডওয়্যার ইনফো সফটওয়্যার টা দেখতে পাবেন। Install বাটনে ক্লিক করে ইন্সটল করবেন। 

সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণভাবে ইন্সটল হয়ে গেলে ওপেন করবেন। এই সফটওয়্যারটি মোবাইলটির হার্ডওয়্যার এ যা যা রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে আপনার সামনে উপস্থাপন করবে। 


এরপর আপনার মোবাইলের about phone এ মোবাইলটির যে সকল ডিটেলস বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো  Droid hardware info সফটওয়্যার বর্ণনার সাথে মিলে কিনা। যদি মিলে যায় তাহলে আপনার সেটটি আসল সেট। আর যদি না মিলে তাহলে নকল সেট। এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। প্রসেসটি আপনার কাছে কষ্টকর মনে হতে পারে কিন্তু এটিই নির্ভরযোগ্য প্রসেস।


CPU - Z সফটওয়্যারটি যেভাবে ব্যবহার করবেন:

এরপরে আসি দ্বিতীয় সফটওয়্যার টা নিয়ে। আপনার যদি কনফিউশন থাকে তাহলে দ্বিতীয় আরো একটি সফটওয়্যার ইন্সটল করে সেম প্রসেসে আরো একবার চেক করে নিতে পারেন। তার জন্য গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে cpu-z  লিখে সার্চ করবেন। সফটওয়্যারটা আপনার সামনে চলে আসবে।


তারপরে ইনস্টল এ ক্লিক করে cpu-z সফটওয়্যারটি ইনস্টল করবেন। একটু সময় নিবে ইন্সটল হওয়ার জন্য। এরপর ওপেন করে ফোনটির যাবতীয় ডিটেইলস দেখে নিতে পারবেন। 

আজকের পোস্টটি কেমন হলো কমেন্টে বক্সে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন! সুস্থ থাকবেন! এই প্রত্যাশায় এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url